আজ আপনাদের মাঝে অরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম। আজ আপনাদের জানাবো শ্বেতি রোগ প্রতিকারের উপায় নিয়ে। শ্বেতি রোগটি মারণ নয়, ঘাতকও নয়। তবে একবার শরীরে(Body) বাসা বাঁধলে তা ক্রমে ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে। বেশির ভাগ শ্বেতি আজকাল অতিরিক্ত রাসায়নিক(Chemical) ব্যবহার থেকে হয়। রোজকার জীবনে এসব রাসায়নিক সবার ত্বক(Skin) সহ্য করতে পারে না। তখনই শুরু হয় সমস্যা। শ্বেতি রোগ ত্বকের এমন এক অবস্থা যাতে ত্বকের স্বাভাবিক রং হারিয়ে সাদা রং ধারণ করে। সাদা রং ধারণের ব্যাপ্তি ও এর পুনরাবৃত্তি নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। ত্বকের যেকোনো অংশ এতে আক্রান্ত হতে পারে। ত্বকে মেলানিন উৎপাদক কোষ সঠিকভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হলে শ্বেতি দেখা দেয়।
শ্বেতি রোগ প্রতিকারের উপায় জেনে নিন
যেকোনো ধরনের ত্বকে এটি দেখা দিতে পারে। তবে এ রোগ(Disease) সংক্রামক বা জীবনের জন্য হুমকি নয়। এটি একটি স্বয়ংক্রিয় ইমিউন অবস্থা যাতে ইমিউন সিস্টেম ত্বককে আক্রান্ত করে। প্রাকৃতিক(Natural) পদ্ধতিতে ইমিউন সিস্টেম অণুকে আক্রমণের জন্য কাজ করে যা অন্ত্রের আস্তরণের মধ্যে প্রদাহ সৃষ্টি করে। রক্তের মতো থাইরয়েড গ্রন্থি, হাড়ের সংযোগ, হাঁটু, ত্বক ইত্যাদিতে অনু থাকে। ত্বক, হাড়ের সংযোগ, থাইরয়েড বা অন্যান্য গ্রন্থিতে থাকা অনু আক্রান্ত হলে শ্বেতির মতো অ্যান্টি-ইমিউন রোগ দেখা দেয়।
ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন কিছু উপায় আছে যা অবলম্বন করলে এই রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক শ্বেতি রোগ নিরাময়ে কয়েকটি প্রাকৃতিক উপায় সম্পর্কে:
আন্ত্রিক স্বাস্থ্য
আন্ত্রিক স্বাস্থ্যের(Health) জন্য প্রত্যেকের উচিত তার অটো ইমিউন সিস্টেম পরীক্ষা করা।
আয়রন এবং দস্তা
শ্বেতি রোগীদের জন্য আয়রণ ও দস্তা সমৃদ্ধ খাবারও গুরুত্বপূর্ণ। বাদাম, বীজ, শাক এবং সবুজ সবজি দস্তা সমৃদ্ধ।
পুদিনা বা তুলসি পাতা
তুলসি বা পুদিনা পাতা পিষে তা লেবু রসে মিশিয়ে পেস্ট করতে হবে। এরপর ওই পেস্ট দিয়ে আক্রান্ত স্থানে ঘষতে হবে। কয়েক দিনের মধ্যে কার্যকর ফল পাওয়া যাবে।
স্ট্রেস
শ্বেতি আক্রান্তদের মানসিক চাপ থেকে মুক্ত থাকতে হবে। কারণ এতে ত্বকের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে পড়তে পারে এটি। তাছাড়া চাপ অন্ত্রে প্রদাহ(Inflammation) ঘটায় যা খাদ্যনালীকে দুর্বল করে এবং ইমিউন সিস্টেমকে আক্রমণ করে।
খাবার সম্পর্কে সচেতনতা
ক্যাফিন, ডার্ক চকলেট, গ্লুটেন, দুধ(Milk) বা দুগ্ধজাত পণ্য, সাদা চিনি এবং সাইট্রাস ফলের মতো কিছু সাধারণ খাবার(Food) শ্বেতি রোগকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। সুতরাং আপনি যে খাবার গ্রহণ করেন তা এই রোগকে বাড়িয়ে তোলে কিনা তা পরীক্ষা করুন এবং ক্ষতিকর হলে তা বর্জন করুন।
বাইরের অংশে প্রয়োগ
শ্বেতি রোগের প্রাথমিক স্তরে ত্বকের বাইরের অংশে কিছু উপকরণের প্রয়োগ এক্ষেত্রে সহায়তা করতে পারে। হলুদের গুঁড়া এবং সরিষা তেলের মিশ্রণ শ্বেতির চিকিৎসায় কার্যকরী। টানা ১৫-২০ দিন এটি প্রয়োগ করলে হ্রাস পেতে পারে এ রোগ।
আখরোট, পেঁপে বেশি করে খান
আখরোট শ্বেতি দূর করতে চমৎকার কাজ করে। কিন্তু এটি আপনার শরীরের জন্য উপযুক্ত কিনা তা দেখতে হবে। আপনি পেঁপে খেতে পারেন অথবা পেঁপের খোসার ভেতরের অংশ আক্রান্ত স্থানে ঘষতে পারেন।
ভিটামিন বি, সি এবং অ্যামিনো অ্যাসিড
এসব ভিটামিন সমৃদ্ধ স্বাস্থ্যকর সুষম খাবার(Balanced food) গ্রহণ করুন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যামিনো অ্যাসিড পেতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খান। এ ছাড়া অন্ত্রের সুস্বাস্থ্যের জন্য খাবার তালিকায় প্রোবায়োটিকস এবং প্রিবায়োটিকস অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
তামা
শ্বেতি রোগের আরেকটি কারণ হলো কপারের ঘাটতি। বাদাম, বীজ এবং সবুজ সবজি তামা সমৃদ্ধ খাবার। তামার পাত্রে সংরক্ষণ করা পানি(Water) পান করে আপনি উপাদানটির ঘাটতি পূরণ করতে পারেন।
স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন
শ্বেতি দূর করতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখা। সুতরাং, এসব বিষয়ে সক্রিয় থাকুন, প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন, নিয়মিত ব্যায়াম করুন, পর্যাপ্ত ঘুমান সুষম খাবার গ্রহণ করুন, তাহলেই নিয়ন্ত্রণে আসবে শ্বেতি রোগ।