Home / স্বাস্থ্য টিপস / রেকটাল ক্যান্সার কি ও কেন হয়

রেকটাল ক্যান্সার কি ও কেন হয়

আজ আপনাদের মাঝে অরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম। আজ আপনাদের জানাবো রেকটাল ক্যান্সার কি ও কেন হয় সে সম্পর্কে। আমাদের যে পরিপাকতন্ত্র আছে তার শেষের যে অংশ, যেটাকে বাংলায় বলা হয় বৃহদন্ত্র, সেই অংশটিকে কোলোরেকটাল বলে। উপরের অংশটিকে কোলোন এবং নিচের অংশ যেটা মলাশয়, স্টুল বা মল জমা থাকে সেটাকে বলা হয় রেকটাম। এ দুটি মিলে হলো কোলোরেকটাল। এখানে যে ক্যান্সার হয় সেটাই কোলোরেকটাল ক্যান্সার।রেকটাল ক্যান্সার কি ও কেন হয়

রেকটাল ক্যান্সার কি ও কেন হয়

ক্যান্সারের জন্য যেসব বিষয় দায়ী: কোলোরেকটাল ক্যান্সারের কারণগুলো হচ্ছে- আমাদের বর্তমান সমাজের ফ্লুয়েন্ট লাইফস্টাইল অর্থাৎ আমাদের যে খাদ্যাভ্যাস সেটাই কারণ হিসেবে খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে গবেষণায় দেখা যাচ্ছে। আমরা রিফাইন খাবার খাচ্ছি। শাক সবজি বা আঁশযুক্ত খাবার কম খাচ্ছি। খাবারের কিছু বিষয় ক্যান্সারের পূর্ববর্তী উপাদান হিসেবে তৈরি হচ্ছে। এগুলোকেই কোলোরেকটাল ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে। আরেকটি কারণ হলো কোলোনিক পলিপ, সেখানে এক ধরনের আঙ্গুলের মতো বৃদ্ধি দেখা যায়। সেটা যদি চিকিৎসা করা না হয় সেটা পরবর্তীকালে ক্যান্সারে রূপ নেয়।

এই ক্যান্সারের রোগীর সংখ্যা কেমন: সাধারণত ফুসফুস ক্যান্সারের পরই কোলোন ক্যান্সার বেশি হয়।আমাদের দেশে এটার এখনো কোনো পরিসংখ্যান নেই। তবে বর্তমানে দেখা যাচ্ছে আমাদের কোলোরেকটাল ক্যান্সার বেড়ে যাচ্ছে খাদ্যাভ্যাসের কারণে, অন্য কিছু কারণও রয়েছে। আর বাংলাদেশে সচেতনতার অভাবে এই রোগের বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে আমাদের কাছে প্রচুর রোগী আসছে কোলোরেকটাল ক্যান্সারের উপসর্গ নিয়ে।

উপসর্গগুলো: সব ক্যান্সারের একটি বৈশিষ্ট্য হচ্ছে প্রাথমিক পর্যায়ে এর কোনো লক্ষণ দেখা যায় না। কোলোনে হলে এক ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পাবে। আর রেকটামে হলে আরেক ধরনের লক্ষণ প্রকাশ পাবে। কোলোনে হলে, পেট ব্যথা, ক্ষুধা মন্দা, শরীরের ওজন কমে যাওয়া, পায়খানার অবস্থা পরিবর্তিত হওয়া (অর্থাৎ একবার হয়তো পাতলা পায়খানা হলো। আরেক বার হয়তো কষা পায়খানা হলো)। আগে সে হয়তো নিয়মিত মল ত্যাগ করতো, এখন হয়তো অনেকবার করতে হয়। এ ছাড়া কালো পায়খানা হতে পারে। রেকটাল ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সকালে পাতলা পায়খানা হবে। একবার টয়লেটে যাওয়ার পর হয়তো মনে হবে পায়খানা পরিষ্কার হয়নি। আবার যাবে। রক্তমিশ্রিত পায়খানা হবে। অথবা মিউকাস এবং রক্তমিশ্রিত পায়খানা যাবে। এই বিষয়গুলো রেকটাল ক্যান্সারে দেখা যায়। এখানে অনেকের ভুল হয় যে এটাকে পাইলস ভেবে দীর্ঘদিন চিকিৎসা করে এবং শেষ পর্যন্ত দেখা যায় ক্যান্সার হয়েছে।

পরীক্ষা ও চিকিৎসা: কোলোরেকটাল ক্যান্সারের এখনো একটা বিষয় রয়ে গেছে, এখনো হাতুড়ে চিকিৎসকের কাছে প্রধান চিকিৎসা হিসেবে রয়ে গেছে এটি। হাতুড়ে চিকিৎসকরা জটিল করে রোগটিকে যখন স্থায়ী করে ফেলেন তখন রোগীরা শেষ পর্যায়ে আমাদের কাছে আসেন। তখন আমরা যে চিকিৎসাগুলো করতে হবে তাই করি।

প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয়ের জন্য যে বিষয়টি করা দরকার সেটি হলো স্ক্রিনিং টেস্ট। আমাদের দেশে যে স্ক্রিনিং টেস্ট হয় সেটাকে বলা হয় কোলোনোস্কোপি। একটা লম্বা নল কোলোনে ঢুকিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হয় সেখানে কোনো পলিপ বা টিউমার আছে কি না। আমাদের দেশে আসলে ৪০-এর পর সবারই কোলোনোস্কোপি করা উচিত। তাহলে আগে থেকে রোগ নির্ণয়ের হার অনেক বেড়ে যাবে।

আরেকটা ভালো বিষয় হচ্ছে প্রাথমিক পর্যায়ের কোলোন ক্যান্সারের খুব চমৎকার চিকিৎসা রয়েছে। অনেক রোগী রয়েছে যারা প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা করার কারণে দীর্ঘদিন ধরে সুস্থ রয়েছে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা হচ্ছে এর একেবারে ভালো হওয়ার চিকিৎসা হচ্ছে অস্ত্রোপচার।
পরিশেষে একটু যোগ করে বলতে পারি ক্যান্সারে মত মনে হলে বা মলাশয়ে জটিলতা দেখা দিলে চিকিৎসার শরণাপন্ন হয়ে রোগ নির্ণয় করতে হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে রোগ নির্ণয় করা গেলে কোলন ক্যান্সারের পরিপূর্ণ চিকিৎসা বাংলাদেশেই সম্ভব।

আমাদের লেখা আপনার কেমন লাগছে ও আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে তবে নিচে কমেন্ট করে জানান। আপনার বন্ধুদের কাছে পোস্টটি পৌঁছে দিতে দয়া করে শেয়ার করুন। পুরো পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

About admin

Check Also

নিয়ম করে যেসব খাবার খেলে ধ্বংস হবে কৃমির বংশ

নিয়ম করে যেসব খাবার খেলে ধ্বংস হবে কৃমির বংশ

আজ আপনাদের মাঝে অরেকটি আর্টিকেল নিয়ে হাজির হলাম। আজ আপনাদের জানাবো নিয়ম করে যেসব খাবার ...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Recent Comments

No comments to show.